স্টাফ রিপোর্টার:

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা এক স্কুল শিক্ষকের ২৫ শতাংশ জমির লাউ গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলার চালা ইউনিয়নের পূর্ব খলিলপুর গ্রামের কৃষক ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম এ বিষয়ে হরিরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে বৃহস্পতিবার দুপুরে হরিরামপুর থানা ওসি মোহাম্মদ মুমিন খান জানিয়েছেন।মঙ্গলবার খলিলপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ক্ষেতে এ ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে সিরাজুল ইসলামের লাউ ক্ষেতে দেখা যায়, ২৫ শতাংশের দুইটি জমিতে লাউ ক্ষেত করেছেন সিরাজুল। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি লাউ ক্ষেত করেছেন তিনি। তার লাউ ক্ষেতে তার বাবা আব্দুল রউফ মা শিরিন বেগম দেখাশোনা ও পরিচর্যা করেন। লাউ ক্ষেত দুটির মাচায় লাউ গাছ গুলো নুয়ে পরে আছে। পাতা মরে গেছে। শতাধিক লাউ ক্ষেতেই পরে আছে।

সিরাজুল ইসলাম জানান, লাউ ক্ষেতের সাথের ২০ শতক জমিটি তিনি কিনেছেন। এ জমিটি প্রতিবেশী হাকিম উদ্দীন কিনতে চেয়েছিলেন। এ জমি কেনাকে কেন্দ্র করে হাকিম উদ্দীনের সাথে বিরোধ চলে আসছে। এর আগে লাউ ক্ষেতে ধুন্দল চাষ করে ছিলেন। হাকিম উদ্দীনের ছাগলে সিরাজুলের ধুন্দল গাছসহ ফসল নষ্ট করলে তার বাবার সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে। জমি কেনা ও কথা কাটাকাটির জেরে বড় ১০০ লাউ ও ছোট ৩০০-৪০০ লাউসহ দুটি ক্ষেতের লাউ গাছ কেটে ফেলে হাকিম। ভুক্তভোগী কৃষক সিরাজুল আরো জানান, তিনি ছাত্র থাকা অবস্থায় ১২-১৩ বছর আগে থেকে বাড়ি সংলগ্ন ওই জমিতে লাউ, ধুন্দুল, কড়লা ও কচু চাষ করে আসছেন। গত বছর প্রায় ২ লক্ষ টাকার লাউ বিক্রি করেছিলেন। এবার একটি ক্ষেতে লাউ বিক্রি শুরু করেছিলেন আর আরেকটা ক্ষেতে ছোট ছোট লাউ আসা শুরু হয়েছে।
বাগানের ৪০০-৫০০ লাউসহ দুটি ক্ষেত কেটে ফেললো হাকিম উদ্দীন। এ বিষয়ে জানতে হাকিম উদ্দীনের বাড়িতে তাকে পাওয়া যায় নি। তার মোবাইলে কল দিলেও বন্ধ থাকায় তাকেপা ওয়া যায় নি।

এদিকে লাউ গাছের সাথে এমন শত্রুতায় হতবাক এলাকাবাসী। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না গ্রামের সাধারণ মানুষ। গ্রামের মানুষের দাবি এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।

পূর্ব খলিলপুর গ্রামের লাউ চাষী ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সেলিম হোসেন বলেন, সিরাজুল কাছাকাছি আমারও একটি লাউ গাছের ক্ষেত রয়েছে। সিরাজুল লাউ চাষে আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে। আর সিরাজুলের লাউ ক্ষেতে বড় এতো ক্ষতি করা হলো। প্রশাসনের কাছে দোষীর শাস্তি দাবি করছি। একই এলাকার শরীফ মুধা বিডিনিউজ টোয়েন্টি ফোরকে বলেন, পাশের বাড়ির হাকিম বলতেছে সব কাইটাফালা সব আমি দেখুমনি। তয় কি কাটবো আমি বুঝিনি। পরে শুনি সিরাজুলের জাংলার (মাচা) সব লাউ গাছ ও লাউ কে যেন কেটেছে।

হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, কৃষি অফিস থেকে সিরাজুল ইসলাম ও তার বাবাকে সব সময় সহায়তা ও পরামর্শ দেয়া হয়। তার ক্ষেতের সকল লাউ গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
খুবই বাজে কাজ করা হয়েছে।

হরিরামপুর থানা ওসি মোহাম্মদ মুমিন খান বলেন, "একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্তে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেপি/নি-১/প