ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস পালিত

মোঃ খোকন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:

৩৩তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস এবং ২৬তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়  র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় দিবসটি উপলক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে টেংকের পাড় থেকে একটি র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি কুমারশীল মোর প্রদক্ষিণ করে। পরে সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খা সঙ্গীতাঙ্গণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমাজসেবা উপ-পরিচালক আঃ কাঈয়ুমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম। আলোচনায় জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ নোমান মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মতিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বীজনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন।

এসময় বক্তারা বলেন, পথেঘাটে ভিক্ষা করতে দেখা শারীরিক প্রতিবন্ধীদের কারণে আমাদের ধারণা প্রতিবন্ধিতা মানে শারীরিক অসম্পূর্ণতা। প্রতিবন্ধিতার একাধিক ধরন রয়েছে। প্রতিবন্ধিতা হতে পারে শারীরিক, মানসিক বা বুদ্ধিবৃত্তীয়, দৃষ্টিজনিত, বাক ও শ্রবণজনিত কিংবা বহুমাত্রিক। প্রতিবন্ধিতার কোনো প্রতিষেধক না থাকলেও আছে প্রতিরোধের উপায়। সুতরাং প্রতিরোধের জন্য প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা খুবই জরুরি।

বক্তারা আরো বলেন, দুর্ঘটনাজনিত কারণে মানুষ বয়সের যে কোনো স্তরে প্রতিবন্ধী হতে পারে। এছাড়া অন্যান্য যেসব কারণে প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম নিতে পারে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কম বা বেশি বয়সে সন্তান ধারণ, মায়ের অপুষ্টিজনিত সমস্যা, শিশু গর্ভে থাকাবস্থায় মা রোগাক্রান্ত বা দুর্ঘটনার শিকার হওয়া, ভুল চিকিৎসা গ্রহণ, প্রসবকালীন সমস্যা কিংবা শিশু জন্মের পর রোগাক্রান্ত হওয়া বা মাথায় আঘাত পাওয়া অথবা অপুষ্টির শিকার হওয়া। অজানা অনেক কারণেও শিশু প্রতিবন্ধী হতে পারে। জন্মের সময় মস্তিষ্কের বিন্যাসগত অসামঞ্জস্যতা অথবা জিনগত অস্বাভাবিকতাসহ জন্ম নিলে শিশু প্রতিবন্ধী হয়। প্রতিবন্ধী হওয়ার যেসব কারণ আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি সেগুলো নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা প্রতিবন্ধিতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এজন্য প্রতিবন্ধিতার কারণগুলো যেমন জানতে হবে তেমনি সবার মধ্যে তা ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করে তুলতে হবে।

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র-জনতার স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় দেশের সুস্থ, অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, দরিদ্র, এতিম প্রতিবন্ধী গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতাসহ অনগ্রসর মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন প্রতিষ্ঠানসমূহ বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে।

সভায় শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়। পরে প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষ্যে তাদেরই অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে সচেতনতার প্রসার এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মর্যাদা সমুন্নতকরণ, অধিকার সুরক্ষা এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতি বছর ৩ ডিসেম্বর বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস পালন করা হয়। ১৯৯২ সাল থেকে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে এ দিবস পালিত হয়ে আসছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে দিবসটি জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস হিসেবেও পালন করা হয়।

জেপি/নি-৩/এমএইচ