শরিফুল গণি উসমানি, গবি: 

আজ ৩ ডিসেম্বর জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন, যা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও মর্যাদার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। এই দিনে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতিভা উদযাপন করা হয় এবং তাদের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি নবায়ন করা হয়।

বাংলাদেশের রিহ্যাবিলিটেশন সেবা বর্তমানে গুরুতর সংকটের মধ্যে রয়েছে। দেশের গ্রামীণ এবং দুর্গম অঞ্চলগুলিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সেবা প্রাপ্তি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। শহরকেন্দ্রিক সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলি গ্রামাঞ্চলের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে। সচেতনতার অভাব, পেশাদার মানবসম্পদের ঘাটতি এবং সীমিত অবকাঠামো এই সেক্টরে উন্নয়নের পথে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে।

সেবা সম্প্রসারণের জন্য করণীয়:

১. স্থানীয় সেবা সম্প্রসারণ: কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে রিহ্যাবিলিটেশন সেবা গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া।

২. পেশাজীবী বৃদ্ধি: বিশ্ববিদ্যালয়ে স্পিচ ও ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি, ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, প্রস্থেটিক্স ও অর্থোটিক্স কোর্স চালু করে দক্ষ পেশাদারের সংখ্যা বাড়ানো।

৩. সচেতনতা কর্মসূচি: স্কুল, কলেজ ও কর্মস্থলে কর্মশালা ও সেমিনারের মাধ্যমে প্রতিবন্ধিতা ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবা সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করা।

৪. প্রযুক্তি ব্যবহার: টেলিহেলথ ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় আধুনিক রিহ্যাবিলিটেশন সেবা সরবরাহ।

৫. সহযোগিতা নেটওয়ার্ক: সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করে রিহ্যাবিলিটেশন সেবার জন্য এক শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম তৈরি।

বিএইচপিআই-পক্ষাঘাতগ্রস্থদের পুনর্বাসন কেন্দ্র (সিআরপি)  এর চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. জোবায়ের আহম্মেদ ইফতি বলেন, 'বাংলাদেশের রূপান্তরের যাত্রায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ অন্তর্ভুক্তি আমাদের সবচেয়ে বড় সামাজিক লক্ষ্য। আমরা এমন এক সমাজ গড়ে তুলতে চাই যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা শুধু পার্শ্বে থাকবেন না, বরং সমাজের সক্রিয় ও প্রভাবশালী অংশীদার হিসেবে কাজ করবেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান এবং সামাজিক সুরক্ষার সমতল সুযোগ তাদের প্রাপ্য। সরকারি নীতি, সামাজিক সচেতনতা এবং সংস্থাগত পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব - যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা তাদের সম্পূর্ণ ক্ষমতা প্রকাশ করতে পারবেন।

তিনি বলেন, ‘আমি এমন এক দৃষ্টিভঙ্গি কাম্য করি যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সম্পূর্ণ সামাজিক অধিকার এবং আত্মনির্ভরশীলতার সুযোগ পাবেন।'

জেপি/নি-৩/প