আব্দুল্লাহ আল আমিন, রংপুর:

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জনসাধারণের প্রত্যাশা ছিল পণ্যের লাগামহীন দাম হয়ত কমবে। কিন্তু অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও বাজারে সব পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। বিশেষ করে ডিমের বাজারে যেন জ্বলছে আগুন। কোনোভাবেই ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে না। যদিও এরই মধ্যে বিদেশ থেকে ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। শুল্ক প্রত্যাহারেরও প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে।

এদিকে উৎপাদক এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিমের বাজার দর নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য নিয়ে ডিমের পাইকারি মূল্য ১১ টাকা ১ পয়সা (প্রতি পিস) আর খুচরা মূল্য (প্রতি পিস) ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করেছে সরকার। তবে সেই দামে বিক্রি হচ্ছে না ডিম।

রংপুর শহরের অটোরিকশা চালক শামিম ইসলামের (৫৫) কাছে ডিমের দাম বাড়ার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাছ-মাংস কিনে খাইতে পারি না বাবা। তাই চাল আর ডিম দিয়ে কোনোভাবে সংসার চালাই। এদিকে ডিমের দাম বাড়তেই আছে, এভাবে ডিমের দাম বাড়লে লবণ দিয়ে ভাত খাইতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘দুই মাস আগেও ৪০ টাকা হালি ডিম কিনে খাইছি। ভাবছিলাম দাম ধীরে ধীরে আরও কমবে। কিন্তু এখন বাজারে এসে আমার মাথায় হাত।

রংপুরের সিটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারের প্রতিটি দোকানেই ডিম ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, আর খুচরা বাজারে হালিতে ৫৪ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

ক্রেতা তারেক মিয়া বলেন, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকার নিত্যপণ্যের ওপর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে নিত্যপণ্যের পাশাপাশি ডিমের দাম আরও বৃদ্ধি পাবে। এতে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষদের নাভিশ্বাস অবস্থা চলতেই থাকবে।

ডিমের বাজারে সংকটের কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীদের দাবি, ডিমের উৎপাদন চাহিদার চেয়ে কম। যদিও সরকার বলছে, উদ্বৃত্ত রয়েছে। এ অবস্থায় বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, চাহিদা ও উৎপাদনের তথ্যে এমন অসামঞ্জস্যতা এ সংকটের একটি বড় কারণ।

রংপুর সিটি বাজারের ব্যবসায়ী আশরাফুল আলম (ডিম বিক্রেতা) বলেন, ‘বাজারে ডিমের সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। তাই বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমাদের করার কিছু নাই। বাজারে ডিমের যে চাহিদা রয়েছে, তার চেয়ে কম ডিম বাজারে আসছে। মূলত এ কারণেই দাম বেড়েছে। আবার বাজারে এসে একটি ডিম ৪-৫ বার হাতবদল হচ্ছে এটাও একটি কারণ।

জেপি/নি-৭/প