রহিদুল ইসলাম, রাজশাহী:
এবার রাজশাহী অঞ্চলে জমিতে উৎপাদিত (ফসল) ক্ষেতেই কন্ড পেঁয়াজ ক্রয়ের হিড়িক পড়ে গেছে। এতে প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচের তিনগুণ লাভে কৃষকের মুখে হাসি।
সরকারিভাবে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ঘোষণা হতে না হতেই পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরাসরি জমিতে গিয়ে কৃষকের উৎপাদিত কন্ড পিঁয়াজ ক্রয় করছেন। দামও হাঁকাচ্ছেন ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা মণ।
তবে এই কন্ড পেঁয়াজ রাজশাহীর দুর্গাপুর, বাগমারা ও তাহেরপুর এলাকাতে আবার আঞ্চলিক ভাষা হিসাবে লাইলা পেঁয়াজ নামেই পরিচিত রয়েছে।
এদিকে বাজারেও বেড়ে গেছে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম। একশত টাকা কেজির পেঁয়াজ এখন দেড়শত টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার রাজশাহী জেলাতে ৭ হাজার ৬শত ৮ হেক্টর জমিতে কন্ড পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ১৫০ থেকে ১৮০ মণ কন্ড পেঁয়াজ।
তবে, এখন দুই একজন কৃষক কন্ড পেঁয়াজ জমি থেকে তুলেছেন, আগামী আরো ১৫/২০ দিন পরে শুরু হবে মূলত কৃষকের উৎপাদিত কন্ড পেঁয়াজ উঠানোর হিড়িক।
তাহেরপুর পৌরসভা এলাকার পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সাজেদুর রহমানের সাথে কথা হয়, কেনো আপনি ক্ষেতেই পেঁয়াজ ক্রয় করছেন। তিনি বলেন, সরকারিভাবে ভারত থেকে পেঁয়াজ ক্রয় বন্ধ ঘোষণার পরেই পেঁয়াজের বাজার বেড়ে গেছে। পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলে আরো দাম বাড়বে। তাই তিনি ক্ষেতেই পেঁয়াজ ক্রয় করছেন।
ক্ষেতেই কন্ড পেঁয়াজ বিক্রেতা দুর্গাপুর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক রবিউল জানান, আমি ৪ হাজার ২৫০ টাকা মণ হিসাবে কন্ড পেঁয়াজ ক্ষেতেই বিক্রি করেছি আজ শনিবার সকালে। পেঁয়াজ পূর্ণ করে তুলতে আরো ১০/১৫ দিন লাগবে।
ক্ষেতেই কেনো কন্ড পেঁয়াজ আগেই বিক্রি করলেন, এমন প্রশ্নে ওই কৃষক বলেন- অগ্রিম দামও ভালো, তাছাড়াও কন্ড পেঁয়াজ জমিতেই আগাছা কেটে পরিষ্কার করেই না রোদে দিয়ে ওখানেই ওজনে বিক্রি। একদিকে দাম ভালো, ওজনেই বেশি হবে আবার বাজারে নিয়ে বিক্রিতে গাড়িভাড়াসহ অনেকটাই খরচ ও সময় বাঁচবে।
একই বিস্তারিত জানালেন কিসমত গণকৈড় গ্রামের কৃষক লাহার প্রাং।
পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী এলেই ক্ষেতেই কন্ড পেঁয়াজ বিক্রয় করবেন, এমন কয়েকজন কৃষক জানান, ক্ষেতেই পেঁয়াজ বিক্রি করবো। দাম অনেক ভালো। এছাড়াও সময় ও খরচ কম হবে।
এদিকে, কৃষকের তথ্য অনুযায়ী, এক বিঘা জমিতে কন্ড পেঁয়াজ উৎপাদনে খরচ প্রতি বিঘায় প্রায় ৪০-৪২ হাজার টাকা। কন্ড পেঁয়াজ উৎপাদন হবে প্রতি বিঘাতে ৫০-৬০ মণ। আর এতে ক্ষেতেই বিক্রিতে প্রতি বিঘায় কৃষকের পিঁয়াজ বিক্রি হবে ২ লাখ টাকা হতে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এতে উৎপাদন খরচের তিনগুণ লাভে কৃষকের মুখে হাসি।
জেপি/নি-৯/এমএইচ