বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ভারত সরকারের পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণার পরপরই পেঁয়াজের বাজারে দাম বেড়েছে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ঘাটতি আছে, তাই দাম বেড়েছে।
সোমবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সেখানে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বেশি। তুলনামূলক কম বেড়েছে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম।
আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৬০ টাকা ছাড়িয়েছে। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর শতক ছুঁই ছুঁই দেশি পেঁয়াজের দাম। বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা কেজি দরে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের এ সময়ে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে আসার পাশাপাশি শুল্ক আরোপের ফলে এই পণ্যের দাম বেড়েছে।
হিলিতে শনিবার যে পেঁয়াজের পাইকারি বাজার ছিল ৪০ থেকে ৪২ টাকা, সোমবার সেই পেঁয়াজ প্রকারভেদে পাইকারদের নিতে হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে। একদিনের ব্যবধানে বন্দর বাজারে আমদানিকারকরা পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ১২ থেকে ১৫ টাকা বেশি দরে। গত শনিবার ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। আর এই ঘোষণার পরই দাম বাড়ে পেঁয়াজের।
এদিকে ‘প্রস্তুতির সুযোগ না দিয়েই ভারত পেঁয়াজের বাড়িয়েছে বলে বিষয়টি দুঃজনক বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক । প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সুযোগ দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন মন্ত্রী। সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ভারতের সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক আখ্যায়িত করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে পেঁয়াজের বাজার কীভাবে সামলাবো সেটা মোকাবিলা করাই এখন আমাদের চ্যালেঞ্জের বিষয়। কিন্তু ভারত কোনো ধরনের প্রস্তুতির সুযোগ না দিয়েই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে, এটা দুঃখজনক। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের উচিত সুযোগ দেওয়া।’
পেঁয়াজের সংকট প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘বড় সমস্যা হলো পেঁয়াজ গুদামে রাখা যায় না, পচে যায়। এটা একটা সমস্যা। চলতি বছরে আড়াই লাখ টন পেঁয়াজ কম উৎপাদন হয়েছে। গতবার দাম না পাওয়াতে চাষিরা পেঁয়াজ উৎপাদন কম করেছে।’ভারত তাদের রফতানি পণ্যের ওপর ৪০ শতাংশ ট্যাক্স বাড়িয়েছে শুনেই দেশের বাজারে দাম বাড়িয়ে ফেলেছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।
সরকার ১৩ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রী বলেন, এখন ভারতের বিকল্প বাজার হিসেবে মিসর, চায়না থেকে পেঁয়াজ আমদানি চেষ্টা করা হচ্ছে। চায়না, জাপান, ইরান, মিসর এসব দেশ থেকে কেউ যদি পেঁয়াজ আমদানি করতে চায় সরকার অনুমতি দেবে। এটা হলে দাম বাড়বে না।
জেপি/নি-২১/এসএম