যৌতুকের টাকা দিতে না পাড়ায় প্রিয়াঙ্কা রবিদাস (২৩) নামে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে ।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ আহতাবস্থায় প্রায় এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার ৭ আগষ্ট মালদহ মেডিক্যাল কলেজে তার মৃত্যু হয়েছে। ভারতের মালদহ জেলার পুখুরিয়া থানার কুমাগঞ্জের আজিমগঞ্জ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে । মৃত ওই নারী স্থানীয় পুখুরিয়া থানার আজিমগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা আকালু রবিদাসের স্ত্রী ।
মঙ্গলবার ৮ আগস্ট ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
এ ঘটনায় নিহত ওই নারীর পরিবারের লোকজন স্থানীয় পুখুরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন । অন্য দিকে, ঘটনার পর থেকেই পলাতক মৃত ওই নারীর স্বামীসহ শশুর বাড়ির লোকজন । প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন বছর আগে বিয়ে হয়েছিল প্রিয়াঙ্কা রবিদাসের (২৩) । কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর যৌতুকের জন্য তাগাদা দেয় শশুর বাড়ির লোকজন । যৌতুক দিতে না পাড়ায় তাঁকে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে নির্যাতন করতেন স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
নিহতের বাবা রাজকুমার রবিদাস বলেন, ‘‘যৌতুকের দাবিতে আমার মেয়ের উপর অত্যাচার করত। ওরা আমার মেয়ের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে মেয়ের। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। আমি দোষীদের শাস্তি চাই।’’
পুলিশ জানায়, প্রিয়াঙ্কা রবিদাস এবং পুকুরিয়া থানার আজিমগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা আকালু রবিদাসের সঙ্গে বছর তিনেক আগে দু’জনের বিয়ে হয়েছিল। প্রিয়াঙ্কার বাপের বাড়ির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে তাঁদের মেয়ের উপর অত্যাচার করত শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। প্রিয়াঙ্কা মা হতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাতে তার উপর অত্যাচারের মাত্রা কমেনি। ওই অবস্থাতেও তাঁকে দিনের পর দিন শারীরিক এবং মানসিক ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, গত ১ অগস্ট গভীর রাতে প্রিয়াঙ্কার উপর ভয়ানক অত্যাচার করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এমনকি মারধরের পর তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বধূর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছিল মালদহ মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
মালদহ জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, ‘‘ঘটনার অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’ দ্রুত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
জেপি/নি-৮/এসএম