প্রতিনিধি, গাইবান্ধা:

বাসদ এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গাইবান্ধায় লালপতাকা মিছিল ও জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার শহীদ মিনার চত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বাসদ (মার্কসবাদী) গাইবান্ধা জেলার আহ্বায়ক কমরেড আহসানুল হাবীব সাঈদের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা।

বক্তব্য রাখেন, পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সদস্য কমরেড আহসানুল আরেফিন তিতু, জেলা কমিটির সদস্য কমরেড গোলাম ছাদেক লেবু, কাজী আবু রাহেন শফিউল্লাহ খোকন, কমরেড মাহবুবুর রহমান খোকা,  সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও গণতান্ত্রিক ছাত্র  জোটের সমন্বয়ক  ছাত্রনেতা সালমান সিদ্দিকী প্রমুখ।

জনসভায় বক্তারা বলেন, ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব সংগ্রাম ও জীবনদানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন হয়েছে। এতবড় ত্যাগ ও সংগ্রামের ফলে আন্দোলনের মধ্য থেকেই দাবি উঠেছে সমাজের সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার। ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত প্রতিটি সংগ্রামের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো-এখানে শোষণমুক্তির স্বপ্ন নিয়ে ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক-জনতা জীবন দিয়ে একেকটা জুলুমবাজ সরকারের পতন ঘটিয়েছে। কিন্তু তারপরে যারা ক্ষমতায় বসেছে তাদের কেউই জনগণের সেই আশা-আকাঙ্ক্ষা-স্বপ্ন পূরণে কোন কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। তারা পাহারা দিয়েছে বড়লোকের সম্পদ, সুযোগ করে দিয়েছে ধনিক শ্রেণিকে লুটপাটের। এভাবে গত ৫৩ বছরে ধনী-গরীবের বৈষম্য হয়েছে আকাশ-পাতাল।

২৪ এর গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩ মাসের রাষ্ট্র পরিচালনা জনগণকে ধীরে ধীরে হতাশ করে তুলছে।শেষ পর্যন্ত এ সরকারও মানুষের মৌলিক সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। জনগণের সংকট সমস্যা সমাধান করতে হলে শিক্ষা নিতে হবে মহান রুশ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের কাছ থেকে।

১০৭ বছর আগে পৃথিবীর বুকে সর্বহারা শ্রেণি মার্কসবাদ- লেনিনবাদের শিক্ষায় বিপ্লবের মাধ্যমে যে নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিল তার তুলনা নেই । ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর বিপ্লবের তাৎপর্য কেবলমাত্র রাশিয়ার মাটিতে সীমাবদ্ধ ছিল না, দুনিয়ার দেশে দেশে শ্রমজীবী মানুষের কাছে এনেছিলো মানবমুক্তির এক নতুন বার্তা। শ্রমিক শ্রেণির যে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো সোভিয়েত ইউনিয়নে সেই সমাজতান্ত্রিক দেশ মানুষ কে সকল ধরনের নিরাপত্তা দিয়েছিলো।সেখানে ছিল না কোন ভিক্ষুক, বেকার,পতিতা। সবার জন্য  শিক্ষা  ও চিকিৎসা  ছিল বিনামূল্যে। নারীরা পেয়েছিলো প্রকৃত মর্যাদা ও স্বাধীনতা।

লেনিনের নেতৃত্বে নভেম্বর বিপ্লবের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় এমন এক সমাজ যেখানে দারিদ্র ও ক্ষুধা নেই। নেই বেকারত্ব ও অশিক্ষা, নেই ভিক্ষা ও পতিতাবৃত্তি। সাম্রাজ্যবাদীদের যুদ্ধ চক্রান্তের বিপরীতে মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছিলো এই সমাজতন্ত্র। এর নেতৃত্বে গড়ে উঠেছিলো যুদ্ধবিরোধী শান্তিশিবির।

এককভাবে সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের এই অভূতপূর্ব সাফল্য ও অগ্রগতির পরও তার পতন ঘটে। কিন্তু তা স্বত্বেও এর শিক্ষা মার্কসবাদ লেনিনবাদের সেই দৃঢ় ও উন্নত উপলব্ধি ও কমরেড শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারাকে প্রয়োগ করে বাংলাদেশের মাটিতে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিয়োজিত বাসদ (মার্কসবাদী)-র এই সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে দেশের সকল শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ ও গণতন্ত্রমনা মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

জেপি/নি-১/এমএইচ