প্রতিনিধি,ঝিনাইদহ :
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহীদ নূর আলী কলেজের অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরুর বিরুদ্ধে এমপিও ভুক্তির কথা বলে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ওই কলেজের ডিগ্রি শাখার ৬জন শিক্ষক এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশন, শিক্ষা উপদেষ্টা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ পাঠিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শহীদ নূর আলী কলেজের ডিগ্রি শাখা এমপিও ভুক্তির প্রলোভন দেখিয়ে অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু তাদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। অথচ ডিগ্রি শাখা এমপিও না হলেও শিক্ষকদের টাকা ফেরত দেননি।
শিক্ষকদের অভিযোগ ২০১৫ সালে মোটা অঙ্কের টাকা ডোনেশান দিয়ে কলেজের ডিগ্রি পর্যায়ে নিয়োগ পান। ২০১৯ সালে স্নাতক শাখার শিক্ষকদের এমপিও ভুক্তি করে দিবেন বলে অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু শিক্ষকদের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন এবং শিক্ষক কর্মচারী মিলে ২০ লাখ টাকা দিতে বলেন। অধ্যক্ষের চাহিদা মোতাবেক তারা ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক রবিউল ইসলাম জানান, তারা কেউ জমি বন্ধক রেখে, কেউ গরু ছাগল বিক্রি করে অধ্যক্ষের নির্দেশনা মতো নুর আলী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ সাজ্জাদ ও প্রভাষক প্রবীর কুমার বিশ্বাসের হাতে ১০ লাখ টাকা দেন। কিন্তু এমপিও ভুক্তি হয়নি তাদের পদ। আবার টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। শিক্ষকরা জানান, অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু স্থানীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের মদদ পুষ্ট ও ফ্যাসিবাদী শক্তি আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে কাজ করেছে। এদিকে ১০ লাখ টাকা গ্রহণের ৬ বছর পার হলেও তাদের টাকা ফেরত না দেওয়ায় শিক্ষকরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
শিক্ষকরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু প্রভাবশালী শিক্ষক সুব্রত নন্দী ও কমিটির সদস্য গোলাম রসুলকে সাথে নিয়ে কলেজে নিয়োগ দিয়ে ১০ কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন। আওয়ামী লীগের আমলে বিতর্কিত তিনটি সংসদ নির্বাচনে দলবাজ প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ দিয়েও কামিয়েছেন কাড়ি কাড়ি টাকা।
এদিকে অধ্যক্ষের ভাই তৌহিদ সাত্তার রাজুকে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক পদে মহিলা কোটায় চাকরি দিয়ে চরম অনিয়ম করেছেন। পুরুষ হয়ে তৌহিদ সাত্তার রাজু কি ভাবে মহিলা কোটায় চাকরি করেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ খণ্ডন করে বলেন, এমপিওভক্তির জন্য টাকা আমি কোন টাকা গ্রহণ করিনি। সাবেক এমপির মাধ্যমে অভিযোগকারী রবিউল ইসলাম নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে কালিগঞ্জ ইসলামী ব্যাংক শাখায় ওই টাকা জমা করেন।
তিনি জানান, ২০১৭ সালে নুর আলী কলেজ ডিগ্রী শাখার অনুমোদন লাভ করে। এমপিও ভুক্তির জন্য কিছু নিয়ম কানুন আছে। ডিগ্রি শাখায় কলেজের একটিমাত্র ব্যাচ বের হয়েছে, যে কারণে এমপিও ভুক্ত এখনো হয়নি। তারা যে অভিযোগ দিয়েছে সেটা মোটেও সত্য নয়। আমি ওই ৬ শিক্ষকের কাছ থেকে কোন টাকা গ্রহণ করিনি। অভিযোগের বিষয়ে ঝিনাইদহ দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিদর্শক কাউসার আহম্মেদ জানান, দুদকের নিয়মিত মিটিংয়ে দাখিলকৃত অভিযোগগুলো ওপেন করা হয়।
জেপি/নি-৫/প