আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত দেশের বিস্তীর্ণ জনপদ। এ এমন এক দুর্যোগ, যার প্রভাব রয়ে যায় দীর্ঘমেয়াদে। বন্যার পানি নেমে গেলেও মানুষ সহসাই নিরাপদ জীবনে ফিরতে পারেন না। নানা রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি হয় বন্যাদুর্গত এলাকায়। স্বাভাবিক জীবনে ফেরাটা তখন এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর মানুষ যখন নিজের বসতবাড়িতে ফিরতে শুরু করেন, তখন নিরাপদ পানি এবং খাবারের ব্যবস্থা যেমন করতে হবে, তেমনি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকেও যত্নশীল হতে হবে।

এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর যেসব বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি:

  • বন্যাদুর্গত এলাকায় মানুষ নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে পড়ে থাকেন। নিরাপদ পানির অভাবে ডায়রিয়া, কলেরা টাইফয়েড, জন্ডিসসহ নানা ধরনের রোগ জীবাণু দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। জীবনধারণের জন্য পানির বিকল্প নেই। তাই ফিটকিরি এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করে নিতে হবে।
  • বন্যাদুর্গত এলাকায় ওরস্যালাইন, প্যারাসিটামল, গজ ব্যান্ডেজ এবং প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধের ব্যবস্থা রাখতে হবে। একইসাথে যেকোনো স্বাস্থ্য সমস্যায় স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
  • সুস্থ থাকতে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি পরিবেশের পরিচ্ছন্নতাও প্রয়োজন। বন্যার পানিতে ভিজে যাওয়া কাপড়চোপড়, বাসনকোসন, ঘরের মেঝে নিত্যব্যবহার্য জিনিসসহ যা কিছু বন্যার পানির সংস্পর্শে এসেছে, তার সবই জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।
  • পানি নেমে যাওয়ার পর মানুষ যখন নিজ ঘরে ফিরবেন, তখন শুরুতেই হয়তো তারা রান্নার আয়োজন করতে পারবেন না। আশপাশের বাজার ঘাট নাও থাকতে পারে। এমন অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস যেমন চাল-ডাল, গুঁড়া দুধ, মসলা ইত্যাদি এবং প্রয়োজনীয় শুকনা খাবার যেমন মুড়ি, চিড়া, বিস্কুট, বাদাম, খেজুর ইত্যাদির ব্যবস্থা করে রাখতে হবে।
  • গবাদি পশুও আমাদের দেশের অনেক মানুষের জীবন জীবিকার অবিচ্ছেদ্য অংশ। বন্যা পরবর্তী সময়ে এই প্রাণীদেরও খাবারের সংকট দেখা দিতে পারে। তাই গবাদি পশুর যত্ন এবং খাবারের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
  • এছাড়া ঘর বাড়ি পরিষ্কার করার সময় মাস্ক, রাবারের গ্লাভস ও রাবারের বুট পড়ে নিতে হবে। যেসব ঘরে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছিল, সেসব ঘরের বৈদ্যুতিক সামগ্রী ত্রুটিপূর্ণ হয়ে পড়তে পারে। সম্ভব হলে কারিগরি সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে এগুলো মেরামতের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • এছাড়া বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সাপের উপদ্রব অনেক বেড়ে যায়। সাপ থেকে নিরাপদ থাকতে কার্বলিক অ্যাসিড খুব কার্যকর। ঘরের এক কোণায় একটি বোতলে কার্বলিক অ্যাসিড নিয়ে তা মুখ খোলা অবস্থায় ঝুলিয়ে রাখলে সাপ থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব। তবে কার্বোলিক অ্যাসিড অবশ্যই কাঁচের বোতলে রাখতে হবে।

জপি/নি-৩০/প

 


জেপি নিউজে জনপ্রিয়