ম্যাচ শুরুর আগেই চট্টগ্রামের আকাশে ছিল মেঘের আনাগোনা। এমন কন্ডিশনে স্বাভাবিকভাবেই টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া শ্রেয়। সুযোগটা কাজে লাগিয়ে সফরকারী জিম্বাবুয়েকে প্রচণ্ডভাবে চেপে ধরেন তাসকিন আহমেদ-মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনরা। ৪১ রানে ৭ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ে শেষে গিয়ে বড় চমক দিয়েও ১২৪ রানের বেশি করতে পারে নি।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ১২৫ রানের ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই লিটন দাসকে হারিয়ে হোঁচট খাওয়া বাংলাদেশকে পরে পথ দেখান অভিষিক্ত তানজিদ হাসান তামিম ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দুই দফায় বৃষ্টির পরও ম্যাচের দীর্ঘতা কমেনি। তিনবার জীবন পাওয়া তানজিদের ৬৭ রানের ইনিংসে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে নেয় ২৮ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে। পাঁচ ম্যাচের টি ২০ সিরিজের স্বাগতিকরা ১-০ তে এগিয়ে গেল। সিরিজের পরবর্তী ম্যাচ একই স্টেডিয়ামে আগামীকাল।
টি ২০ ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়টা তাই ছিল প্রত্যাশিত। ১২৫ রানের সামান্য লক্ষ্যে নেমেও লিটন দাস তিন বলে এক রান করে ব্লেসিং মুজারাবানির বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন।
সর্বশেষ শ্রীলংকার বিপক্ষে বাজে পারফরম্যান্স করা লিটন আবারও চাপে পড়ে গেলেন। এরপর মন্থর ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকেন তানজিদ ও নাজমুল। চতুর্থ ওভারে মুজারাবানির বোলিং দুবার সহজ ক্যাচ তুলে বেঁচে যান। অভিষিক্ত তানজিদ। জীবন পাওয়ার পরের ওভারেই নিজেকে মেলে ধরেন।
মুজারাবানির পরের ওভারেই দুই ছক্কা ও এক চার মারেন তানজিদ। এরপর বৃষ্টিতে খেলা কিছুটা সময় বন্ধ থাকার পর শুরু হলে ছক্কার চেষ্টায় ২১ করে ফেলেন নাজমুল। তবে আরও দারুণ ব্যাটিংয়ে তানজিদ তুলে নেন অভিষেকেই হাফ সেঞ্চুরি। পরে আরও একটি জীবন পেয়ে এই তরুণ বাঁ-হাতি ব্যাটার করেন ৪৭ বলে ৬৭০ রান। তার ইনিংসেছিল আট চার ও দুই ছক্কা। তাওহিদ হৃদয় নেমে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ১৮ বলে করেন ৩৩ রান।
তার আগে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিং দিয়ে ভুল হলো কিনা এ নিয়ে কিছুটা শঙ্কাই তৈরি হয়েছিল। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ভড়কে দিয়েছিলেন স্বাগতিক বোলারদের। প্রথম চার ওভারে দারুণ সব ড্রাইভ পুল শটে জিম্বাবুয়ে বড় কিছুর সম্ভাবনা দেখাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই বাংলাদেশের বোলাররা জেগে ওঠে। সঙ্গে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় দুর্ভাগা রানআউটও।
এক উইকেট হারিয়ে ৩৬ রান তোলা জিম্বাবুয়ে এরপর পাঁচ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলে ছয় উইকেট সেখানেই থামে না, ৪১ রান তুলতেই নেই সাত উইকেট। ওই মুহূর্তে সফরকারীদের পঞ্চাশ পার হওয়াই চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছিল। তাসকিন, সাইফউদ্দিন, শেখ মেহেদি হাসান অসাধারণ বোলিংয়ে ভালো কিছুরই অনুভূতি তৈরি করে দেয় টিম ম্যানেজমেন্টে। অথচ এরপরও এই জিম্বাবুয়েকে সহজে আটকাতে পারেনি স্বাগতিকরা।
মাহমুদউল্লাহর হাতে জীবন পেয়ে মাসাকাদজ্ঞর সঙ্গে অষ্টম উইকেটে ৭৫ রানের জুটিতে দলকে একশ পার করান ক্লাইভ মাডান্ডে। আন্তর্জাতিকটি ২০তে অষ্টম উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি। বিপর্যয় সামলে ৩৯ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলেন মাস্তান্ডে।
ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ৩৮ বলে ৩৪ রান করেন মাসাকাদজ। আর কেউ ২০ রানও করতে পারেননি। চার ব্যাটার আউট হন শূন্য রানে। সবার চোখ ছিল সাইফউদ্দিনের ওপর। প্রায় ১৮ মাস পর
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার দিনে বোলিংয়ে উজ্জ্বল এই অলরাউন্ডার। চার ওভার বোলিং করে মাত্র ১৫ রান দিয়ে নেন তিনি তিন উইকেট। অষ্টম উইকেট জুটিও ভাঙেন তিনি।
আরও ধারালো দেখিয়েছে তাসকিনকে। তিনি ১৪ রান দিয়ে নিয়েছেন সাইফউদ্দিনের সমান তিন উইকেট। এক মেডেনসহ ১৬ রানে মেহেদীর শিকার দুটি উইকেট। তবে ধারাবাহিকতায় কিছুটা ছেদ পড়েছে শরীফুলের। সঙ্গে রিশাদ হোসেনের ওপরও চড়াও ছিল সফরকারীরা। দুজনেই সমান চার ওভার করে বোলিংয়ে উইকেটশূন্য থেকে দিয়েছেন ৩৭ করে রান।
জেপি/নি-৩/প