দেশপ্রেম ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

জেপি নিউজ২৪ ডটকম:

বাংলাদেশে গত ১৪ বছর ধরে সরকার পরিচালিত অব্যাহত উন্নয়নের ধারা কোনোভাবেই যাতে ব্যাহত না হয় সেই লক্ষ্যে দেশপ্রেম ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) ক্যাডারের নতুন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আপনাদের (বিসিএস কর্মকর্তাদের) আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। 

 কারণ, গত ১৪ বছর ধরে আমরা দেশের যে উন্নয়ন করেছি, তা কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত করা যাবে না।

সোমবার রাজধানীর শাহবাগে বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে চলমান ১২৭, ১২৮ এবং ১২৯তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। তিনি নবীন অফিসারদের ১৪ বছর আগের বাংলাদেশের অবস্থা কল্পনা করতে বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, খাদ্য উৎপাদন, শিক্ষা ও ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার এবং অন্যান্য খাতে বাংলাদেশ কী পরিবর্তিত হয়নি? বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে।’ বর্তমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নতুন কর্মকর্তাদের দেশপ্রেম ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই সময়ে দেশে ৯ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল এবং দেশ স্থিতিশীলতার সঙ্গে আর্থসামাজিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি আবারও দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

তিনি বাংলাদেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি দেশে পরিণত করতে এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই কাজ আরও ত্বরান্বিত করতে নবীন কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধানের ২১(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীরা সর্বদা জনগণের সেবা করতে বাধ্য। তাই, আমি চাই আপনারা (নতুন কর্মকর্তারা) জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করুন।

নিজের পিতার (বঙ্গবন্ধুর) পদচিহ্ন অনুসরণ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি নিজেকে কখনোই প্রধানমন্ত্রী ভাবী না। আমি নিজেকে জনগণের সেবক মনে করি। তাদের সেবা করাই আমার একমাত্র দায়িত্ব।’

তিনি নতুন কর্মকর্তাদের তৃণমূলে গিয়ে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

আসে সেই টাকা থেকে, যা দেশের জনগণের কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয়। তাই, তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করা সবার কর্তব্য। এই বিষয়টি আপনাদের সর্বদা মাথায় রাখতে হবে। তিনি নবীন অফিসারদের বলেন, মানুষের সেবা করা তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় কাজ হওয়া উচিত।

শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস এবং দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বঙ্গবন্ধু যে কতটা সংগ্রাম ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা জানতে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ১৯৪৮ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকারের গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর লেখা বইয়ের ভলিউম পড়ার জন্য নবীন কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি বঙ্গবন্ধুর ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইটি পড়ারও আহ্বান জানান।

দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য তাঁর সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়নের মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তন করা।

জনগণকে উন্নত জীবন দেওয়ার উদ্যোগের অংশ হিসেবে তিনি বলেন, তাঁর সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে ঘর দেওয়ার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে আবাসন প্রকল্প ও টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করা এবং চলমান কোভিড-১৯ মহামারিতে দুস্থ মানুষকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান। সূত্র: বাসস 

জেপি নিউজ২৪ ডটকম/শরিফুল