জেপি নিউজ ২৪ ডটকম:
এবারের ঈদুল ফিতরে সড়ক, রেল, নৌ-পথে সর্বমোট ৩৪১টি যানবাহন দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩৫৫ জন নিহত এবং ৬২০ জন মানুষ আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২ মে) তোপখানা রোডের শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত 'ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনা প্রতিবেদন প্রকাশ' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
গত ১৫ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ১৫ দিনে দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনা গুলোর মধ্যে সড়কে দুর্ঘটনা ছিল ৩০৪টি, এতে নিহত হন ৩২৮ জন ও আহত হয়েছেন ৫৬৫ জন। রেলপথে ২৭টি দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত ও ৫৫ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১০টি দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত ও ২২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে মোজাম্মেল হক বলেন, এবারের ঈদে দ্রব্যমূল্য ও পরিবহন ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া ও অতিরিক্ত গরমসহ বিভিন্ন কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ শতাংশ মানুষের কম যাতায়াত হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারির কারণে এবারের ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। এ কারণে ভোগান্তি কম হওয়ার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে ১৮.২ শতাংশ, এবং প্রাণহানি কমেছে ২১.১ শতাংশ।
বরাবরের মতোই এবারও মোটরসাইকেল রয়েছে দুর্ঘটনার শীর্ষে। ঈদে ১৬৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৭ জন নিহত, ১২০ জন আহত হয়েছে। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৫৪.৩ শতাংশ, নিহতের ৫১ শতাংশ এবং আহতের ২১.৩ শতাংশ প্রায়।
তিনি আরো বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার এই চিত্রকে একটি নমুনা রিপোর্ট বলা যায়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে যে পরিমাণ সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটছে তা সংবাদমাধ্যমে আসে না। তাই এসব দুর্ঘটনার হিসাব রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এবারের ঈদে শুধুমাত্র ঈদের দিনে বেপরোয়া মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২১৬ জন পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের মধ্যে ৯৬ জনের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর। এসব দুর্ঘটনার খবর সংবাদমাধ্যমে না আসায় আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরতেও পারিনি।
সংবাদ সম্মেলনে দেশের সড়ক মহাসড়কে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচল, জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং ঠিকমতো না থাকা, মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটিকে এসব দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা, উল্টোপথে যানবাহন চালানো, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন এবং অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো সহ দুর্ঘটনার আরো কিছু কারণও উল্লেখ করা হয়।
জেপি নিউজ ২৪ ডটকম/ডেস্ক