ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার বামনটোলা গ্রামের ভোটার তালিকায় বাংলদেশি ভুয়া ভোটারের হদিস পাওয়া গেছে। আর সেই ঘটনা সামনে আসতেই ওই ভোটার তালিকা থেকে তিন বাংলাদেশির নাম বাদ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ওই তিন অভিযুক্ত বাংলাদেশি নাগরিক হচ্ছেন মোহাম্মদ ডালিম, নাজমুল হোসেন ও নজরুল ইসলাম। জানা গেছে, বাংলাদেশের ভোটার তালিকার নাম থাকা সত্ত্বেও ভারতের ভোটার তালিকাতেও তাদের নাম রয়েছে। এই বিষয়টি সামনে আসতে নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। 

মালদহ জেলার কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের শাহবাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বামনটোলা গ্রামের ওই তিন বাসিন্দার নাম ভোটার তালিকায় আসে। সম্প্রতি তাদের নাম বাদ দেয়ার আবেদন জানিয়ে কালিচক-৩ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন কর্মকর্তার (বিডিও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেন বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক সন্তোষ কুমার মন্ডল। এরপর ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযুক্ত তিন বাংলাদেশির নাম বাতিল প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করে প্রশাসন।

সন্তোষ কুমার মন্ডল বলেন, শাহবাজপুর-বামনটোলা এলাকার মানুষরা দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের কাছে অভিযোগ জানিয়ে আসছিল যে সেখানকার ভোটার তালিকায় এমন কিছু ব্যক্তির নাম আছে যারা স্থানীয় বাসিন্দা নন বা তাদের এলাকায় দেখা যায় না। পরবর্তীতে খবর নিয়ে দেখা গেল যে তারা আসলে বাংলাদেশি ভোটার। এই অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা বিডিওকে আবেদন জানাই বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে। তার অভিযোগ শুধু এই এলাকা নয়, গোটা রাজ্যজুড়ে এই ভুয়া ভোটারের খেলা চলছে। সরকার টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ভোট ব্যাংকের রাজনীতি করে চলেছে। 

যদিও বিজেপির এই অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, সীমান্ত এলাকা পাহারা দেয় বিএসএফ। তাহলে অনুপ্রবেশ হচ্ছে কি করে? বেআইনিভাবে কারো নাম ভোটার তালিকায় উঠলে প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া মোহাম্মদ ডালিমের চাচা মাহীবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ডালিম এদেশে রয়েছে। তার বাবা-মাও এখানে থাকে। ভোটার তালিকা থেকে ওর নাম বাদ পড়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিডিও অফিস থেকে লোকজন এসেছিল, তারা প্রয়োজনীয় খোঁজখবর নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ডালিমের অনেক আত্মীয়-পরিজন আছে। সেক্ষেত্রে যদি সে বেআইনিভাবে এখানে এসে থাকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হোক। এটা আমরা চাই। 

বামনটোলা গ্রামের এক বাসিন্দা তাহেদুর হোসেন বলেন, আমার জন্ম থেকেই আমি ডালিমকে এখানে বসবাস করতে দেখে আসছি। বাংলাদেশে ডালিমের আত্মীয়-স্বজন আছে। আরবে কাজ করতে যায়। তবে ও এখানেই থাকে।

কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের বিডিও মামুন আক্তার বলেন, ভুয়া ভোটার বলে একটি অভিযোগ করা হয়েছিল, সেই বিষয়ে আমরা তদন্ত করি। তদন্তে দেখি ওরা এখানে বসবাস করছে না। একসময় এখানে বসবাস করত জায়গা জমি ছিল। তাই নাম বাতিল করার প্রক্রিয়া চলছে। পাঁচ বছর আগের করা ভোটার তালিকায় তাদের নাম ছিল। এখন জানি না কোথায় গেছে, তবে বাংলাদেশ বা অন্য কোথাও চলে গিয়ে থাকতে পারে। যাইহোক তাদের নাম কাটা যাবে, প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে নাম অন্তর্ভুক্ত করা বা বাদ দেয়ার বিষয়টি একটি চলমান প্রক্রিয়া।