নেপালে গত পাঁচ বছরে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গতকাল বিমান দুর্ঘটনায় ৭২ জন আরোহীর মধ্যে ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপরই আবারও আলোচনায় কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে নেপালে বিমান দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে। 

গতকাল রোববার পোখারা বিমানবন্দরের কাছে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে ৬৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলে বাকীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

গতকালের বিমান দুর্ঘটনাটি নেপালের ৩০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা। 

ফরাসি কর্তৃপক্ষের সহায়তায় বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ তদন্ত করে দেখছে একটি সরকারি কমিটি। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমানটি তৈরি করেছিল বিমান নির্মাতা কোম্পানি এটিআর। কোম্পানিটির সদর দপ্তর ফ্রান্সে।

নেপালে বার বার বিমান দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে সিএনএন এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিরূপ আবহাওয়ার পাশাপাশি দেশটির ‘বিরূপ ভূগঠনও’ এই সমস্যার একটি অংশ। আর এসব কারণে ‘ব্যাপক চ্যালেঞ্জের’ মুখে পড়তে হয় পাইলটদের।

নেপালে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ১৪টি পাহাড়ের মধ্যে এভারেস্টসহ ৮টিই দেশটিতে অবস্থিত। ফলে পাহাড়ি এই ভূখণ্ডে, বিশেষ করে প্রতিকূল আবহাওয়ার সময় পথ ঠিক রেখে উড়োজাহাজ চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। দেশের অধিকতর দুর্গম ও পাহাড়ি অংশে প্রবেশের জন্য ছোট উড়োজাহাজ ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় বলে বিষয়গুলো আরও জটিল ঠেকে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নেপালের লুকলা শহরের বিমানবন্দরটিকে প্রায়ই বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর বিমানবন্দর বলা হয়। কারণ বিমানবন্দরটির রানওয়ে দুটি উঁচু পাহাড়ের ঢালে অবস্থিত। রানওয়েটি সোজাসুজি একটি গভীর খাদের কাছে গিয়ে শেষ হয়েছে। এই বিমানবন্দরে ২০০৮ ও ২০১৯ সালসহ গত বছরগুলোয় একাধিক প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে। আকাশপথে এই ঝুঁকি আরও বাড়িয়েছে পুরোনো উড়োজাহাজ পরিচালনা। 

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংগঠন (আইসিএও) তাদের এভিয়েশন সেফটি ইমপ্লিমেন্টেশন পার্টনারশিপের মাধ্যমে ২০১৫ সালে নেপালকে সহযোগিতার বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়।

নিরাপদ উড্ডয়নের উদ্বেগ নিরসনে দুই বছর পর আইসিএও এবং নেপাল অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করার ঘোষণা দেয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় নিরাপদ উড্ডয়নের মানদণ্ডে উন্নতি করেছে দেশটি। তবে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।