সৌদি আরবের একজন বিখ্যাত আইনবিষয়ক অধ্যাপককে টুইটার অ্যাকাউন্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে ‘দেশবিরোধী’ খবর শেয়ারের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২০১৭ সালে নতুন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের অধীনে সৌদি সরকারের ভিন্নমতের বিরুদ্ধে চালানো অভিযানে ৬৫ বছর বয়সী আওয়াদ আল-কারনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, সৌদি নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে আল-কারনিকে একজন বিপজ্জনক প্রচারক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে ভিন্ন মতাবলম্বীরা জানান, আল-কারনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ও সুপরিচিত বুদ্ধিজীবী। তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে ২০ লাখ ফলোয়ার রয়েছে।
আল-কারনির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণ সংবাদমাধ্যমকে তুলে ধরেছেন তার ছেলে নাসের। তিনি সৌদি আরব থেকে পালিয়ে গিয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। সেখানে তিনি আশ্রয় চেয়েছেন।
মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী এবং নির্বাসনে থাকা সৌদি ভিন্নমতাবলম্বীরা সতর্ক করে জানান, সৌদি সরকারের সমালোচক বলে বিবেচিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নতুন করে কঠোর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
একজন সৌদি ভিন্নমতাবলম্বীকে যুবরাজ টার্গেটে পরিণত করার ঘটনা এটিই প্রথম নয়।
গত বছর একজন লিডস পিএইচডি ছাত্রী এবং দুই সন্তানের জননী সালমা আল-শেহাবকে একটি টুইটার অ্যাকাউন্টে ভিন্নমতাবলম্বীদের অনুসরণ ও রিটুইট করার জন্য ৩৪ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। টুইটার ব্যবহারের জন্য নুরা আল-কাহতানি নামের আরেক নারীকে ৪৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বিচার প্রক্রিয়ার নথি ঘেটে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের শাসনামলের শুরু থেকেই দেশটিতে অপরাধমূলক করা হয়েছে।
সৌদি সরকার এবং রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত বিনিয়োগকারীরা সম্প্রতি মার্কিন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তাদের আর্থিক অংশীদারিত্ব বাড়িয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে টুইটার-ফেসবুক এবং ডিজনির মতো বিনোদনমূলক কোম্পানি।
মানবাধিকার কর্মীদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই মাসের শুরুতে সৌদি আরব উইকিপিডিয়ায় বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দুইজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে। এর কয়েক সপ্তাহ আগে সৌদির বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য একজন সাবেক টুইটার কর্মীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান