গত বছরের শুরুর দিকে মার্কিন সরকার আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিলে দেশটিকে নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় তালিবানরা। আর ক্ষমতা দখলের পর থেকেই আফগানিস্তানে নারীদের খেলাধুলা নিয়ে কড়াকড়ি আইন আরোপ করে সংগঠনটি। পরিস্থিতি এতোটাই ভয়ানক যে নারী খেলোয়াড়দের প্রাণে বাঁচতে ছাড়তে হচ্ছে নিজের দেশ।  

আফগানিস্তানে নারী ও শিশুদের শিক্ষা এবং খেলাধুলায় তালিবানের হস্তক্ষেপ নজর এড়ায়নি বিশ্ববাসীর। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও উন্নত বিশ্বের দেশগুলো শুরু থেকেই এর প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে। এবার সে প্রতিবাদে শামিল হল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ড। আফগানিস্তানে নারী ও শিশুদের শিক্ষা এবং খেলাধুলায় হস্তক্ষেপের কারণে দেশটির সঙ্গে ক্রিকেট সিরিজ বাতিল করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। 

চলতি বছরের মার্চে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। আফগানিস্তান স্বাগতিক হলেও নিরপেক্ষ ভেন্যু সংযুক্ত আরব আমিরাতে হতো সে সিরিজ। কিন্তু সিরিজের দুই মাস আগেই সেটা বাতিল জানিয়ে দিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। 

সিদ্ধান্তটা শুধু বোর্ডের নয়, অস্ট্রেলিয়ান সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএ। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বোর্ডটি জানায়, সম্প্রতি তালিবানরা আফগানিস্তানে মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণ নিষিদ্ধ করায় তারা সিরিজ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে। একই দিন আইসিসির প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালারডাইসও আফগানিস্তানের নারীদের ওপর কড়াকাড়ি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। 

আফগানিস্তানের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার এই সিরিজটি ওয়ানডে সুপার লিগের অংশ। ফলে সিরিজে অংশ না নিলে পয়েন্ট হারাতে হতে পারে অজিদের। তবে কাজটা অস্ট্রেলিয়া প্রথমবার করেছে এমন নয়, ২০২১ সালের নভেম্বরে নারীদের ওপর তালিবান সরকারের বিতর্কিত নীতির কারণে হোবার্টের একমাত্র টেস্ট স্থগিত করে অস্ট্রেলিয়া। 

এবারের সিরিজে না খেললেও আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম অনুযায়ী ২০২৬ সালের আগে আরও দুটি সিরিজে মুখোমুখি হওয়ার কথা আছে অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তানের। ২০২৪ সালের আগস্টে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে হবে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ২০২৬ সালের আগস্টে একটি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলতে আফগানিস্তান যাবে অস্ট্রেলিয়ায়।