নোয়াখালীর হাতিয়ার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ভাসানচর শরণার্থী শিবিরে ২০২২ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ মাসে ৫২৫ জন রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে।

ভাসানচর শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের মার্চ মাসে ভাসানচরে ১৩ জন, এপ্রিল মাসে ৩২ জন, মে মাসে ২৫ জন, জুনে ৪১ জন, জুলাইয়ে ৪০ জন, আগস্টে ৫০ জন, সেপ্টেম্বরে ৮৫ জন, অক্টোবরে ৭৭ জন, নভেম্বরে ৮১ জন ও ডিসেম্বর মাসে ৮১ জন নবজাতকের জন্ম হয়। তবে ২০২২ সালের মার্চ মাসের আগে সেখানে জন্ম নেওয়া মোট নবজাতকের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ভাসানচরে গত ১০ মাসে জন্ম নেওয়া এসব নবজাতকের মধ্যে শতকরা ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ সিজারিয়ান এবং ৯৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ নরমাল ডেলিভারিতে হয়েছে।

জানা যায়, ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রথম দল ভাসানচরে আসে। ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর ভোর রাতে ভাসানচরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা দম্পতি মোহাম্মদ কাশেম ও রাবেয়া খাতুনের ঘরে জন্ম নেয় একটি ছেলে শিশু। ওই শিশুটিই ভাসানচরে জন্ম নেওয়া প্রথম নবজাতক।

নোয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ও ভাসানচরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কো-অর্ডিনেটর ডা. মো. সোহরাব হোসেন জানান, রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সেখানে ২০ শয্যার একটি হাসপাতাল করা হয়েছে। সেখানে সার্বক্ষণিক ২ জন মেডিক্যাল অফিসার, ৩ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স, ২ জন প্যারামেডিকস, ২ জন মিডওয়াইফ, ২ জন এমএলএসএস, ২ জন সিএইচসিপি, ১ জন বাবুর্চি ও ২ জন সিকিউরিটি গার্ড সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, হাইফা, ফ্রেন্ডশিপ, আরটিআই ও ব্র্যাকের কর্মীরাও রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা আছে। আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা ক্যাম্পগুলোতে গিয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের খুঁজে বের করে তাদের হাসপাতলমুখী করে এবং সেবাপ্রদান করে। কোনো রোগীকে যদি সেখানে সেবা দিয়ে সুস্থ করা সম্ভব না হয়, তবে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের শরণার্থী ওয়ার্ডে রেফার করা হয়।