logo
আপডেট : 09, December 2024 15:55
‘ঢাকা টু আগরতলা’ লংমার্চের ডাক বিএনপির ৩ সংগঠনের

‘ঢাকা টু আগরতলা’ লংমার্চের ডাক বিএনপির ৩ সংগঠনের

ঢাকা থেকে আগরতলা পর্যন্ত লংমার্চের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির তিন সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকদল।

আগামী বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টন থেকে সকাল ৮টায় এ লংমার্চ শুরু হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সংগঠনগুলো।

মূলত বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলা, পতাকা অবমাননা, ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তথ্যসন্ত্রাস এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের অযাচিত হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার দাবিতে এই লংমার্চ পালন করবেন তারা।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২ ডিসেম্বর (সোমবার) ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে ভারতের হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির একদল উচ্ছৃঙ্খল সদস্য কর্তৃক সহিংস হামলা হয়েছে।

এ সময় একদল উচ্ছৃঙ্খল সন্ত্রাসী  বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে, মিশনের সম্পদ বিনষ্ট করেছে। সহিংস ঘটনার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নীরব ভূমিকায় ছিল, যা ওই ঘটনার পেছনে কর্তৃপক্ষের মৌন সম্মতিকে ইঙ্গিত করে। ভিয়েনা কনভেনশনের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী কূটনীতিকদের সুরক্ষা দিতে ভারত সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়া বিগত ২৮ নভেম্বর কলকাতায়ও একই ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটেছে।

আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল মনে করছি, বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে সহিংস হামলা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাতের শামিল। 

এ ছাড়া ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত উসকানিমূলক বক্তব্য এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর কথা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের অবমাননা।

এতে বলা হয়, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর ভারতের মিডিয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লাগামহীন প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। ছাত্র-জনতার সরকারকে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে তারা ক্রমাগত ভিত্তিহীন এবং কল্পনাপ্রসূত খবর প্রচার করছে। তাদের অপপ্রচার এবং গুজবের কারণে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা একই সঙ্গে ভারতের সংবিধানের ৫৫ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনকে মেনে নিতে পারছে না। ভারত গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে। গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত আরো অনেক ব্যক্তি ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। ভারত এখন বাংলাদেশি ক্রিমিনালদের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

হাসিনার পতনের পরে ভারত কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন সংখ্যালঘু নির্যাতন এর প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। শেখ হাসিনাকে ভারতের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার সরকারকে বিব্রত করার সুযোগ দিয়েছে। 

বহিষ্কৃত ইসকন নেতা, বাংলাদেশের নাগরিক চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার, তদন্ত এবং বিচার সম্পূর্ণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু ভারতের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত মন্তব্য করে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

ভারত একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাপ্রবণ রাষ্ট্র। ভারত তার নিজের দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চরমভাবে ব্যর্থ। সুতরাং ভারতের কোনো নৈতিক অধিকার নাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করার। 

বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলা, পতাকা অবমাননা, ভারতের মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলমান তথ্য সন্ত্রাস এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ থেকে ভারতের বিরত থাকার দাবিতে ঢাকা থেকে আগরতলা অভিমুখে লংমার্চ অনুষ্ঠিত হবে।

আগামী ১১ ডিসেম্বর নয়াপল্টন থেকে সকাল ৮টায় এই লংমার্চ শুরু হবে। বাংলাদেশের সর্বস্তরের ছাত্র, যুবক এবং স্বেচ্ছাসেবী জনতাকে এই লংমার্চে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

জেপি/নি-৯/এমএইচ