স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর:
৩২ বছরের বৈষম্য অবসান করা লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ সমূহে বিধিমোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত ও নিয়মিত কর্মরত ৩ হাজার ৫০০ জন অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষককে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ আদেশে এমপিওভুক্তির দাবিতে ঢাকা শিক্ষা ভবনের সামনে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচিতে শিক্ষকদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার প্রতিবাদে রংপুরে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) রংপুর প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন রংপুর জেলা শাখার আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন রংপুর জেলা শাখার সভাপতি মাহমুদুল হক শিমুলের সভাপতিত্বে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগীয় শাখার সমন্বয়ক আবু সাঈদ সুজন, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আনোয়ার হোসাইনসহ আরো অনেকেই ।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেন, আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি এমপিওভুক্ত কলেজে অনার্স মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত নন এমপিও শিক্ষক। ১৯৯২ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক রোষানলে পড়ে গত ৩২ বছর ধরে আমাদের ৪৯৫টি বেসরকারি এমপিওভুক্ত কলেজে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জন নন-এমপিও অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষককে কোন বেতন-ভাতা না দিয়ে এমপিও বিহীন করে চরম বৈষম্য সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। এর ফলে উচ্চ দ্রব্যমূল্যের বাজারে দীর্ঘদিন ধরে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছি।
বক্তারা আরও বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে সারাদেশের বেসরকারি কলেজ সমূহে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী কৃতিত্বের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছে। এছাড়া করোনা প্রাদুর্ভাবের সময় থেকে অধিকাংশ কলেজগুলোতে বেতন বন্ধ ছিল। ফলে, উচ্চশিক্ষায় নিয়োজিত এ সকল শিক্ষক পরিবার পরিজন নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
বক্তারা বলেন, এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সময়ে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচিসহ বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার পরেও অদ্যাবধি সরকারি বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ অক্টোবর/২৪ হতে ১৭ অক্টোবর/২৪ তারিখ পর্যন্ত ঢাকায় শিক্ষা ভবনের মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে ১৭ অক্টোবর ২০২৪ বিকালে আমরা 'মার্চ টু যমুনা' কর্মসূচি ঘোষণা করি। এতে আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদেরকে অগ্রসর হতে বাধা দেয়। ফলে আমরা রাস্তায় বসে পড়ি। এমন সময় পেছনের দিক থেকে পুলিশ বাহিনী আমাদের উপর লাঠিচার্জ করে এবং টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের অনেক শিক্ষক আহত, রক্তাক্ত হয় এবং সমাবেশ পণ্ড হয়। এ ঘটনার জন্য আমরা শিক্ষক সমাজ লজ্জিত। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
জেপি/নি-২৩/এমএইচ