logo
আপডেট : 27, September 2024 16:45
রংপুরে পরিবেশবান্ধব পার্চিং পদ্ধতি জনপ্রিয়  হয়ে উঠেছে

রংপুরে পরিবেশবান্ধব পার্চিং পদ্ধতি জনপ্রিয়  হয়ে উঠেছে

আব্দুল্লাহ আল আমনি, রংপুর:

রংপুর জেলায় ধানের ক্ষতিকর পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে পরিবেশবান্ধব পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহার সফল প্রমাণিত হয়েছে। জনপ্রিয় উঠেছে পরিবেশবান্ধব পার্চিং পদ্ধতি। তাই কীটনাশক ব্যবহারের পরিবর্তে পোকামাকড় দমনের জন্য এই পদ্ধতিটি অঞ্চলজুড়ে প্রচার করা হচ্ছে।

রংপুরের কৃষি সম্প্রসারণ (ডিএই) অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দুই ধরনের পার্চিং পদ্ধতি রয়েছে ডেড পার্চিং এবং লাইভ পার্চিং। মৃত পার্চিং এর মধ্যে প্রতি ৫ শতাংশ জমির জন্য একটি মৃত ডাল বা টি-আকৃতির বাঁশের খুঁটি পুঁতে দেওয়া হয়। এতে প্রতি বিঘা (৩৩ শতাংশ জমির জন্য) ছয়টি মৃত ডাল বা টি-আকৃতির বাঁশের খুঁটি পুঁতে দেওয়া হয়। অন্যদিকে লাইভ পার্চিংয়ের জন্য ধানের চারা রোপণের পরপরই প্রতি ৫ শতাংশ জমিতে একটি করে ধইঞ্চা গাছ বসাতে হবে বার্ড পার্চিংয়ের জন্য। এজন্য প্রতি বিঘায় (৩৩ শতাংশ জমিতে) ছয় বা সাতটি ধইঞ্চা গাছ লাগাতে হবে।

বিভিন্ন ধরনের পাখি মাঠে বসানো সেই ডালে বা লাঠিতে বসে পোকামাকড়, লার্ভা ও পোকামাকড়ের ডিম ধরে খায়। বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করার সময়  দেখা গেছে অনেক কৃষক আমন ধান ক্ষেতে পরিবেশ বান্ধব পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন যাতে ফসলকে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যায়।

মিঠাপুকুর উপজেলার জয়গীরহাট এলাকার কৃষক জসিম মিয়া বলেন, তিনি ইতিমধ্যে ৩ বিঘা আমন ক্ষেতে মরা পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে সন্তোষজনক ফল পেতে শুরু করেছেন। প্রাকৃতিক ভাবে কীটপতঙ্গ মারা যায় বলে তার কীটনাশক ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন নেই। ফলস্বরূপ, তিনি কীটনাশক কেনার জন্য যে অর্থ ব্যয় করতে হয়েছিল তা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাঁচাতে পারবেন, তিনি যোগ করেছেন।

পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী এলাকার কৃষক হালিম জানান, স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উৎসাহে তিনি প্রতি বছর ৪ বিঘা জমিতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে উল্লেখযোগ্য লাভবান হন। ধান ক্ষেতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হলে তা কীটনাশক ছাড়াও কাজ করে। তাকে মাত্র একবার কীটনাশক স্প্রে করতে হবে যাতে ক্ষেতের অবশিষ্ট কয়েকটি পোকা ধ্বংস করা যায়।

ডিএই রংপুরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, মাজরা পোকা ধানের সবচেয়ে বড় শত্রু। গাছের ডালে বা টি-আকৃতির বাঁশের খুঁটিতে বসে প্রতিটি পাখি প্রতিদিন প্রচুর পোকামাকড় খেয়ে ফেলতে পারে। ফলস্বরূপ, কীটপতঙ্গ ধানের তুষ কাটতে পারে না, ফলে ভালো উৎপাদন হয়। ডিএই কর্মকর্তারা ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার না করে এই পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি ব্যবহার করতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করেন।

তিনি আরও আশা প্রকাশ করেন যে ভবিষ্যতে আরও কৃষকরা তাদের ফসলি জমিতে পরিবেশবান্ধব পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কম খরচে বেশি ফলন পেতে এবং কীটনাশকের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে মুক্ত পরিবেশ পেতে পারেন।

জেপি/নি-২৭/প