হিন্দু বাড়িতে ভাঙচুর ও মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

আব্দুল্লাহ আল আমিন, রংপুর:

রংপুর মহানগরীর ৩৩ নং ওয়ার্ড ও পীরগাছা উপজেলার হিন্দু বাড়িতে ভাঙচুর ও মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ভূক্তোভোগীরা। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় নগরীর স্থানীয় এক কমিউনিটি সেন্টারে লিখিত সংবাদ সম্মেলন পড়ে পাঠ করেন বৈষম্য বিরোধী নাগরিক ঐক্য মাহিগঞ্জ থানার সদস্য সচিব এবং ২৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর ইসলাম রাজু।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ইং রোজ মঙ্গলবার রংপুরের স্থানীয় এক পত্রিকায় প্রকাশিত "রংপুরের প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার চেয়ে কাঁদলেন লিপি রানী" সংবাদটি পড়ে আমিসহ আমরা সকলেই হতবাক ও বাকবিমূঢ় হয়ে পরি। প্রকাশিত সংবাদটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।

বর্তমানে হিন্দু ভাইদের নিয়ে সরকার এবং প্রশাসন সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ৫ই আগস্টের পরে আমাদের এই রংপুরসহ মাহিগঞ্জে এমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, যা সম্প্রীতি নষ্ট হবার কারণ হয়।

তিনি বলেন, সত্য ঘটনাকে ধামাচাপা দেবার জন্য উক্ত তথাকথিত মিথ্যা সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রশাসন এবং রাষ্ট্রকে বিপদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে যা আমাদের এই সমাজে কাম্য নয়। তথাকথিত মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনে সংবাদ পাঠ কারিনী লিপি রানীর স্বামীর নাম- শ্রী স্বপন বর্মন তারা ৩ ভাই, উক্ত লিপি রানীর স্বামী স্বপন বর্মন পারিবারিক কলহের জের ধরে তাঁর ছোট ভাই রিপন বর্মনকে প্রচণ্ড মারধর করে বাড়ি হতে বেড় করে দেয়, রিপন সমাজের অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তির সামাজিক বিচার না পেয়ে তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তি গত ২৮/০৮/২০২৩ ইং তারিখে ৮.৬৬ শতক পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী ফেরদৌস আলমের নিকট উপযুক্ত দামে সাব-দলিল করে বিক্রয় করে দেন। পরবর্তীতে ১ বছর ২ মাস পর উক্ত লিপি রানীর স্বামী স্বপন বর্মন মাহিগঞ্জে এসে বাবু রাম কৃষ্ণ সোমানীর জ্যেষ্ঠ সন্তান বাবু রবি সোমানীকে সামাজিক সমঝোতার মাধ্যমে উক্ত ৮.৬৬ বিক্রিত জমিটি ফেরৎ পাবার আশা ব্যক্ত করিলে স্বপন বর্মনকে আমার নিকট পাঠিয়ে দেন এবং সামাজিক সমঝোতার মাধ্যমে ছোট ভাইয়ের বিক্রিত সম্পত্তি ফেরৎ পাওয়ার আশা ব্যক্ত করিলে আমরা স্বপন বর্মনের বাড়ির পাশে ডা. শীব কুমার বর্মনের আঙ্গিনায় বসে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে বষয়টি নিয়ে আলোচনা করে, পরবর্তী ৭ দিন পর বাদী স্বপন বর্মন বিবাদী ফেরদৌস আলমকে রবি সোমানীর মাহিগঞ্জস্থ অফিসে পুনরায় বৈঠকে বসি সমঝোতার জন্য। কিন্তু সেইদিনও সমঝোতা হয়নি স্বপন বর্মনের জন্য। ফেরদৌস আলম আমাদের অনুরোধে তাঁর ক্রয়কৃত জমিটি ফেরৎ দিতে রাজি হন।

ক্রয়কৃত জমির সব খরচ মিলে ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। আমাদের অনুরোধে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ছাড় দেন। জমিটির ফেরৎ মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১০ লক্ষ টাকা। এরপর দুর্গাপূজার ব্যস্ততায় আর কেউ যোগাযোগ করে নাই। এরই মধ্যে গত ২৬ নভেম্বর সে তথাকথিত সাংবাদিক সম্মেলন যা হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে উসকানি, সম্প্রীতি নষ্ট এবং রাষ্ট্র প্রশাসনকে বিচলিত করা ছাড়া আর কিছুই না। স্বপন বর্মনের স্ত্রী লিপি রানী সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষ্যান্ত হননি উপরন্তু তথাকথিত মিথ্যা সংবাদকে পুঁজি করে পীরগাছা থানায় অভিযোগ দায়ের করে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ তার অফিসারদের দিয়ে পরপর দুইবার তদন্ত করেন তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে চাক্ষস দেখতে পান বাড়িঘর ভাঙচুর বা কোন ধরনের ক্ষতিসাধন এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রশাসনের কাছে এই অসত্য সংবাদ পরিবেশনে যারা সহায়তা করেছেন তাঁরা এই সমাজের শত্রু, জাতির শত্রু তাদেরকে তদন্তপূর্বক শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার বিশেষ অনুরোধ করছি।

সংবাদ সম্মেলনে মাহিগঞ্জ হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ব্যক্তিত্ব পরেশনাথ মন্দিরের সভাপতি, সমাজসেবক, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবু রাম কৃষ্ণ সোমানী, ২৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শামিম, সিনিয়র সহ-সভাপতি খাইরুল আজাদ রমজান, বৈষম্য বিরোধী নাগরিক ঐক্য কমিটির অন্যতম সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর সদস্য এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাজিদ হাসান লিটন, শ্রী লিটন বর্মন, ফেরদৌস আলম উপস্থিত ছিলেন।

জেপি/নি-৩/প