স্টাফ রিপোর্টার:
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের কাকনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.দেলোয়ার হোসেন মিয়ার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অযোগ্যতা, অবৈধ নিয়োগ এবং নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে অপসারণ করে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী।
বুধবার দুপুরে উপজেলার ধামশ্বর ইউনিয়নের কাকনা উচ্চ বিদ্যালয় ও এলাকাবাসীর আয়োজনে কাকনা উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। পরে প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবিতে কাকনা বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রিয়া আক্তার জানায়, আমাদের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন মিয়া ঠিকমতো স্কুলে আসেন না। তার ইচ্ছামতো বিদ্যালয়ে আসেন আবার চলে যান। এছাড়া তিনি আমাদের দিয়ে ওয়াশরুম পরিষ্কার করার কথা বলেন। আমরা ওয়াশরুম পরিষ্কার, মিলাদ, ক্রীড়াসহ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজের জন্য প্রতিমাসে ফি দেই। আমরা এসব কাজের প্রতিবাদ করলে তিনি আমাদের অশালীন ভাষায় গালাগাল করেন এবং মারধরের হুমকি দেয়।
স্থানীয় সোহেল রানা বলেন, প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন মিয়া বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়ের গাছ-সরকারী বই ও আসবাবপত্র বিক্রি করেছেন এবং টাকা নিজে আত্মসাৎ করেছেন। তিনি কারো কাছে কোনো জবাব দিতেন না। ইচ্ছামতো কাজ করতেন। স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে গোপনে ১৬ লাখ টাকার বিনিময়ে একজন পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া তিনি যখন বিদ্যালয়ে যোগ দেন, তখন বিদ্যালয়ে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী ছিল। কিন্তু তার অযোগ্যতা ও খারাপ ব্যবহারের কারণে কমতে কমতে এখন ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা ২০০-২৫০জন। বিদ্যালয়ে সার্বিক উন্নয়নের জন্য আমরা তার অপসারণ চাই।
আসাদুজ্জামান সবুজ বলেন, ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ের ৮ লাখ ৩৯ হাজার দুর্নীতির দায়ে তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। তৎকালীন দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রশাসক, প্রধান শিক্ষকের সেই অপকর্মের বিষয়টি অবগত আছেন। পরে প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ফান্ডে ৫ লাখ ফেরত দেন। একই সাথে ভবিষ্যতে বিদ্যালয়ে কোন ধরনের অনৈতিক ও দুর্নীতি করবেন না, এই মর্মে উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেন প্রধান শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন মিয়া।
এ বিষয়ে কাকনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন মিয়া জানান, বিদ্যালয় থেকে তাড়ানোর জন্য, সবাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। বরং আমি যোগদানের পর বিদ্যালয়ে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের ৮ লাখ টাকা দুর্নীতির বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি বিদ্যালয়ের এই প্রধান শিক্ষক।
এ সময় বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য জহুর উদ্দিন, অভিভাবক সদস্য সাইদুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, শিক্ষার্থী মীম আক্তার, রিয়া আক্তার, কাকনা এলাকার সোহেল রানা, আনসার আলী, মহিদুর রহমান, আসাদুজ্জামান সবুজ ও মামুন হাসানসহ বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
জেপি/নি-১২/এমএইচ