অমর গুপ্ত, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর):

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার রাঙামাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একরামুল হকের পদত্যাগের দাবিতে আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ স্থানীয়রা।

রোববার সকাল ১০ টা থেকে সকাল ১১ টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী ফুলবাড়ী-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাঙামাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ স্থানীয়রা।

অবরোধের জন্য আঞ্চলিক মহাসড়কের উভয় পাশে শতাধিক ছোটবড় যানবাহন আটকা পড়ে। এতে প্রায় এক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম দুর্ভোগে পড়েন যানবাহনের যাত্রীরা।

মানববন্ধন চলাকালে দাবির সমর্থনে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন, মারুফ হোসেন, তানজিকা আক্তার, জান্নাতুন মাওয়া, জিসা, প্রাক্তন শিক্ষার্থী মোস্তাকিম, আরিফুল ইনলাম, রাকিব হোসেন, অভিভাবক উজ্জ্বল, মিন্টু প্রমুখ।

আন্দোলনকারীরা বলেন, বিদ্যালয়ের বহুতল ভবন নির্মাণের পর প্রধান শিক্ষক একরামুল হক পুরোনো তিনটি ভবনের টিন, কাঠসহ যাবতীয় মালামাল বিনা টেন্ডারে নিজ খেয়ালখুশি মতো বিক্রি করে করেছেন। একই সঙ্গে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছও টেন্ডার ছাড়াই বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন ওই প্রধান শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ ও রেজিস্ট্রেশনসহ উপবৃত্তির জন্য অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছেন। সম্প্রতি কয়েকজন কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এতে করে বিদ্যালয় তহবিল শূন্য হয়ে গেছে।

তারা আরও অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক নিজে ঠিকমতো বিদ্যালয়ে থাকেন না, নিজ খেয়ালখুশি মতো বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করেন। তার কারণেই পালন করা হয় না জাতীয় দিবসগুলোও। বিদ্যালয় চত্বরে শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলিও দিতে পারে না। এসব নিয়ে শিক্ষার্থীরা কথা বলতে গেলে শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকেন। এসব কারণে একজন দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে তারা প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে দেখতে চান না বলেই তার পদত্যাগের দাবিতে অবরোধসহ মানববন্ধন করছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগও দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে রাঙামাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. একরামুল হক বলেন, আন্দোলনকারীরা তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছে তার সবগুলোই মিথ্যা ও বানোয়াট। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তদন্ত করে যদি তদন্তের কোনো প্রকার দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া যায় তবে তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে চলে যাবেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ তমাল বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের উপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কক্ষে ফিরে গেছে। তবে তদন্ত চলাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষককে ছুটিতে দিয়ে বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

জেপি/নি-৯/এমএইচ