পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে জয়ের পর। দ্বিতীয় টেস্টে ইতিহাস গড়ার হাতছানি ছিল বাংলাদেশের দিকে। এবে সেই ইতিহাস তৈরিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বৃষ্টি। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনে রাওয়ালপিন্ডির আকাশ ছিল পরিষ্কার। চতুর্থ ইনিংসের ব্যাটিং চ্যালেঞ্জ পাড়ি দিয়ে স্বাগতিক পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে পরাজিত করেছে বাংলাদেশ। আর তাতেই পাকিস্তানের মাটিতে তাদের হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডোবালো লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজ প্রথম টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইতিহাস গড়ে ১০ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টে জিতে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছেন লিটন দাসরা। প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে হারিয়ে এবং প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জয়ের কীর্তি গড়েছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে টেস্টে বাংলাদেশ চতুর্থবার প্রতিপক্ষকে হোয়াইট ওয়াশ কীর্তি গড়লো।
দ্বিতীয় টেস্টে জয়ে কৃতিত্ব দিতেই হবে লিটন দাস ও মেহেদী মিরাজকে। তবে বোলাররাও দেখিয়েছেন তাদের চমক। পাকিস্তানকে ১৭২ রানে অলআউট করে জয়ের জন্য দলকে ১৮৫ রানের লক্ষ্য এনে দেন বাংলাদেশি বোলাররা। যে লক্ষ্য ছুঁতে ভালো ব্যাটিং করেছেন জাকির হাসান, শান্ত ও মুশফিকরা।
ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বিনা উইকেটে ৫৮ রান তুলে ফেলে। চলতি টেস্টে সিরিজে যা দুই দলের সেরা ওপেনিং জুটি। ৩৯ বলে তিন চার ও দুই ছক্কায় ৪০ রানের ইনিংস খেলে জাকির হাসান আউন হন। পরে ২৪ রান করে ফিরে যান সাদমান ইসলাম।
এরপর অধিনায়ক শান্ত ও সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল ম্যাচটা নাগালে দিয়ে আউট হন। তারা যথাক্রমে ৩৮ ও ৩৪ রান করেন। বাকি পথটা মুশফিক ২২ ও সাকিব আল হাসান ২১ রান করেছেন।
এর আগে ড্র সম্ভাবনাতে রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট শুরু হয়। বৃষ্টিতে ভেসে যায় প্রথমদিনের পুরোটা। দ্বিতীয় দিন টস জিতে বোলিং নিয়ে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানকে ২৭৪ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। যার বড় কৃতিত্ব মিরাজ ও তাসকিন আহমেদের। মিরাজ তুলে নেন ৫ উইকেট। লম্বা বিরতি দিয়ে টেস্টে ফেরা তাসকিন ৩ উইকেট দখল করেন।
ওই টেস্টে পাকিস্তানের ওপেনার সাইম আইয়ুব ৫৮ রান করেন। তিনে নামা অধিনায়ক শান মাসুদ খেলেন ৫৭ রানের ইনিংস। এছাড়া আঘা সালমান ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন।
জবাব দিতে নেমে মহাবিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ২৬ রানে হারায় ৬ উইকেট। ফলোঅন এবং টেস্ট হার যখন চোখ রাঙাচ্ছে তখন ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে যান লিটন দাস ও মেহদী মিরাজ। তারা ১৬৫ রানের জুটি গড়েন। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ২৬২ রান পর্যন্ত যেতে পারে। পাকিস্তানের চেয়ে পিছিয়ে থাকে ১২ রানে। ওই ইনিংসে লিটন দাস টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেরা ১৩৮ রানের ইনিংস খেলেন। তুলে নেন চতুর্থ সেঞ্চুরি। মিরাজ খেলেন গুরুত্বপূর্ণ ৭৮ রানের ইনিংস।
দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানকে ধসিয়ে দেওয়ার কাজটা করেছেন দলের পেসাররা। মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামা হাসান মাহমুদ ৫ উইকেট তুলে নেন। টেস্ট ক্যারিয়ারে যা তার প্রথম ফাইফার। তরুণ পেসার নাহিদ রানা পুরো ইনিংসে শুধু নাভিশ্বাস তোলা গতি ও বাউন্সার দিয়ে যাননি, তুলে নেন মহামূল্যবান ৪ উইকেটও। অন্য উইকেটটি তাসকিন নেওয়ায় দেশের পক্ষে টেস্টে প্রথমবার পেসারদের দখলে যায় ১০ উইকেট।
জেপি/নি-৩/প