বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টুর্নামেন্ট শুরুর দুইদিন আগে আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বলছেন, ‘সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বিসিবির’। তবে বিপিএলের নতুন দল সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার মতে, শুধু বিপিএল না, সব জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বিপিএলের এ মৌসুমের উদ্বোধনী ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মুখোমুখি হবে সিলেট। এ ম্যাচের আগে বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন মাশরাফি। সেখানেই উঠে এসেছে বিপিএলের সমালোচনা করে করা সাকিবের মন্তব্যের প্রসঙ্গ।
গত আসর চলার সময় সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, ‘বিশ্বের ভেতর ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ হিসেবে বিপিএলের অবস্থান পাঁচ-ছয় নম্বরে। এবার তো এই টুর্নামেন্টকে বলেছেন ‘যা-তা’। তাহলে কি র্যাঙ্কিংয়ে ফেলার মতো অবস্থায়ই নেই বিপিএল?
মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, পরিবেশ দেখলে আপনার তা–ই মনে হবে। কারণ, এক মাঠে ৬-৭ টি দল অনুশীলন করছে। রংপুর যেমন তাদের নিজ দায়িত্বে নিজেদের মাঠে অনুশীলন করছে। এ বিষয়গুলো কিন্তু ম্যাটার করে। আমাদের ওই নির্দিষ্ট দলের সুযোগ-সুবিধা। ওই যে বললাম না, আয়োজন সঠিক পন্থায় করতে হবে। তখন হয়তো বা এটা হবে।
তিনি বলেন, আপনি খালি চোখে যে কেউ এসে দেখে যে, একই মাঠে সবকিছু হচ্ছে, অনুশীলন হচ্ছে। এটা হ–য–ব–র–ল ব্যাপার, বলতে পারে। কিন্তু দিন শেষে খেলার মাঠে খেলা কিন্তু খেলার মতোই হয়। একটা টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য আছে, শুরুর দিকে একটা হাইপ তোলার ব্যাপার আছে, এ জিনিসটা হয়তো আমরা শুরু থেকেই পারিনি, এটা সত্য।
সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক বলেন, এই ছোট ছোট জিনিসগুলো নিয়ে ক্রিকেট বোর্ড চিন্তা করলে কিন্তু বড় আকার ধারণ করে। এগুলো যদি পরিবর্তন করে, তাহলে তো পরিবর্তন হবেই। পরিবর্তন না হওয়ার তো কোনো কারণ নেই। এমনও না যে, আমাদের মাঠ নেই। ফতুল্লা পড়ে আছে, আরো কিছু মাঠ পড়ে আছে। বাইরেও আছে। এগুলো যদি একটু ব্যবস্থা করা যায় খারাপ হয় না।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শুরু হয়েছিলো এক দশক আগে । এই সময়ে নতুন করে অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ শুরু হয়ে ছাড়িয়ে গেছে বিপিএলকে। প্রথম আসরের আগে যেমন প্রশ্ন এসেছিলো। দশ বছর পরও অবস্থাটা বদলায়নি। এটা কি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার?
মাশরাফি বলেন, আমার কাছে মনে হয়, শুরু থেকেই আমাদের দু’টো জিনিসের সমন্বয়টা ভালো হয়নি। মিডিয়ার সঙ্গে ক্রিকেট বোর্ড, বোর্ডের সঙ্গে খেলোয়াড়- ত্রিমুখী একটা বিষয় ঘটেছে। প্রথমত বিপিএল নিয়ে কেউই ইতিবাচক ছিলো না মিডিয়ায়। তারপর যদি দেখেন, খেলার মাঠে যখন এসেছে, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট তখন ওই জায়গায় ছিলো না। এ নিয়ে কিন্তু অনেক আলোচনা হয়েছে। কারো জায়গা থেকে কেউ কিন্তু আক্রমণাত্মক হতে পারেনি।
তিনি বলেন, খুবই দুর্ভাগ্যজনক সারা বিশ্বের সবাই এগিয়ে গেছে। তাদের দেশের মিডিয়াও নিজ দেশের টুর্নামেন্টকে প্রচার করছে সারা বিশ্বে। আমরা হয়তো তা পারিনি। এখানে একতরফা বললেই হবে না। আমাদের চ্যালেঞ্জও আছে। আমরা হয় তো কখনো ঢুকিনি। ক্রিকেট বোর্ড থেকে হয় তো মার্কেটভ্যালু যে উপরে উঠালে আরো উপরে উঠতে পারে, এই যে কাজটা হয় তো আমরা করে দেখিনি।
বিপিএলের দরপতনের পেছনে একটা সমস্যাকেই বড় করে দেখেন মাশরাফি। তিনি বলেন, আমাদের ক্রিকেটের একটাই সমস্যা, জাতীয় দলের বাইরে আর কোনো দল নেই। এটা হচ্ছে আমাদের প্রথম সমস্যা। জাতীয় দলকে যে তৈরি করে বাইরের অন্যান্য সব দল। শুধু বিপিএল না সব জায়গায় আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের হলো এখন সামনে আসছে তা, শেষ হলে পেছনের ব্যাপারগুলো ভুলে যাবো।